মহামারি করোনাভাইরাস সংকটে অসহায় মানুষের পাশে না গিয়ে হাতগুটিয়ে ঘরে বসে প্রেস ব্রিফিংয়ে কর্মকাণ্ড সীমিত রাখায় বিএনপি নেতাদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। শুক্রবার (১৯ জুন) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে করোনাভাইরাসে দলের সদ্যপ্রয়াত নেতৃবৃন্দের আত্মার শান্তি কামনা এবং অসুস্থ নেতাকর্মীদের আরোগ্য প্রার্থনা ও দোয়া মাহফিল শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, করোনা প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার শুরু থেকেই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, মন্ত্রিপরিষদ ও সংসদ সদস্যবৃন্দ এবং বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা জনগণকে সুরক্ষা দেওয়া ও সহায়তা করার জন্য ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। যে কারণে আমরা দেখতে পারছি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ বহু নেতাকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। বিশেষ করে বরেণ্য নেতা মোহাম্মদ নাসিম, সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ, সিলেটের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান মৃত্যুবরণ করেছেন। এর মূল কারণ হচ্ছে, তারা জনগণের পাশে থেকে কাজ করছিলেন এবং তা করতে গিয়েই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের তুলনায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের করোনাভাইরাস আক্রান্তের খবর তেমন না থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, কেউ আক্রান্ত হোক সেটি আমরা কখনও কামনা করি না। বিএনপি নেতারা সবাই সুস্থ থাকুন, আমরা এবং সব মানুষ যেন সুস্থ থাকে সেটিই আমরা কামনা করি। সেই সাথে এটিও সত্য যে, যারাই জনগণের পাশে থেকে কাজ করছেন তারাই আক্রান্ত হচ্ছেন এবং তাদেরই আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। অপরদিকে বিএনপি নেতারা যারা হাতগুটিয়ে বসে আছেন, ঘরের মধ্যে থেকে প্রেস ব্রিফিং আর কিছু ফটোসেশনের মধ্যে কাজকর্ম সীমাবদ্ধ রেখেছেন, জনগণের পাশে দাঁড়াননি তাদের আক্রান্ত হবার ঝুঁকি কম। তবে আমি সব সময় প্রার্থনা করি বিএনপি নেতৃবৃন্দ সবাই সুস্থ থাকুন।
দেশের স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়েছে বলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হাছান মাহমুদ বলেন, দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যতটুকু আছে সেই সামর্থ্যকে কাজে লাগিয়ে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রশাসনের প্রাণান্তকর চেষ্টায় এখনও বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে কম মৃত্যুহারের দেশগুলোর একটি। সেই সাথে স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের সকল উদ্যোগ হাতে নেওয়া হয়েছে। সুতরাং অর্বাচীনের মতো কথা না বলে তাদের জনগণের পাশে দাঁড়াতে অনুরোধ জানাই।
এর আগে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের প্রয়াত নেতা মোহাম্মদ নাসিম, সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ, সিলেটের সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানসহ দলের সদ্যপ্রয়াত নেতৃবৃন্দের আত্মার শান্তি ও অসুস্থ নেতাকর্মীদের আরোগ্য প্রার্থনা করে অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সরাসরি উপস্থিত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, বি.এম মোজাম্মেল হক, এস.এম কামাল হোসেন, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ এতে অংশ নেন। মাহফিল শেষে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দের দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা এবং দেশ ও বিশ্বকে করোনা থেকে মুক্তির জন্য মোনাজাত করা হয়।